।। নিজস্ব প্রতিবেদক,১৭ ডিসেম্বর ২০২৫।।
বান্দরবানের থানচি উপজেলায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ভেঙে দেয়া অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়ার চব্বিশ ঘন্টা না পেরুতেই ফের চালু করলো যুবলীগনেতা আনিসুর রহমান সুজন। পরিবেশ অধিদপ্তর’সহ সংশ্লিষ্টদের মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজের অভিযোগ উঠেছে যুবলীগেরনেতা ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং ফাউন্ডেশনের দাতা পলাতক আনিছুর রহমান সুজনের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, থানচি উপজেলার সদর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে থানচি-আলীকদম সড়কের পাশ্ববর্তী হেডম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেঁষেই পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হয়েছে পরিবেশ বিধ্বংসী ড্রাম চিমনির অবৈধ ইটভাটাটি। ভাটার পাশেই উষামং হেডম্যান পাড়া পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর গ্রাম এবং বৌদ্ধ বিহার রয়েছে। গতরোববার ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ভেঙে দেয়া ড্রাম চিমনি ফের লাগিয়ে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করে পোড়ানো হচ্ছে ইট। ভাটার পিছনে পাহাড়ের বনাঞ্চল উজাড় করে নির্বিচারে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে মওজুদ করা হয়েকয়েক লক্ষাধিক ঘনফুট লাকড়ি।
স্থানীয় বাসিন্দার চহ্লামং, মাংস্রামং অভিযোগ করে বলেন,
পরিবেশ রক্ষায় ক্ষতিকর ইটভাটা বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে থানচিতে অবৈধ ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজ চলছে জোরেশোরে। চলছে ফসলী জমি ও পাহাড় কেটে মওদুদ করা মাটি দিয়ে ইট তৈরি এবং গাছপালা কেটে ইট পোড়ানোর লাকড়ি মওজুদ। শোনেছি মেসার্স এস বিএম ব্রিকসের মালিক যুবলীগনেতা আনিছুর রহমান সুজন পরিবেশ অধিদপ্তর’সহ সংশ্লিষ্টদের মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করেছে। তাইতো ভেঙে দেয়ার চব্বিশ ঘন্টার মাথায় ইটভাটাটি ফের চালু করতে পেরেছে। পরিবেশ উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
স্থানীয় বাসিন্দা উথোয়াই সিং মারমা ও উবানু মারমা বলেন, দিনের বেলায় লোকচক্ষুর আড়ালে ইট তৈরির বিভিন্ন প্রস্তুতি চালানো হলেও রাতের আঁধারে পাহাড় থেকে মাটি ও বন থেকে কাঠ এনে ইটভাটায় মজুত করা হচ্ছে। কালো ধোঁয়ায় চারপাশের বাতাস দূষিত হচ্ছে। ফলে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী এবং পাশ্ববর্তী পাহাড়ি গ্রামের শিশু, নারী ও বয়স্কদের মধ্যে শ্বাসযন্ত্রজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অবৈধ ইটভাটাটি দ্রুত বন্ধের দাবী জানাচ্ছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মেসার্স এস বিএম ব্রিকসের মালিক পলাতক যুবলীগনেতা আনিছুর রহমান সুজনের মোবাইলফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি৷ হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানোর পরও উত্তর দেয়নি৷
তবে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে ইটভাটা পরিচালনার বিষয়টি সত্য নয়। থানচি ইটভাটার বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মামলা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, অভিযান চালিয়ে ইটভাটাটি ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। ফের চালুর অভিযোগ পেয়েছি, শিগগিরই ফের ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান পরিচালনা এবং আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।।
যুবলীগনেতার দাপট, প্রশাসন ভেঙ্গে দেয়ার চব্বিশ ঘন্টা না পেরুতেই থানচিতে অবৈধ ইটভাটা ফের চালু
Related Posts
Add A Comment
