নিজস্ব প্রতিবেদক, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫।।
দীর্ঘ একযুগ পর বান্দরবানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’র প্রশিক্ষণ বিভাগ দেশব্যাপী প্রযোজনা কেন্দ্রিক নাট্যকর্মশালা ও প্রথম মুনীর চৌধুরী জাতীয় নাট্যোৎসব-২০২৫ ঘিরে মঞ্চনাটক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবাররাতে বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে ২০ জন তরুন নাট্যে শিল্পীদের অংশ গ্রহণে মঞ্চায়িত হয় মঞ্চনাটক চইংজা:খ্রাং। স্থানীয় মারমা জনগোষ্ঠীর ভাষায় নামকরণকৃত নাটকটির বাংলা অর্থহলো কাল্পনিক। প্রায় এক ঘন্টার এই মঞ্চনাটকে বহুভাষিক অঞ্চল বান্দরবান জেলার বৈচিত্র্যময় জনজীবনের একটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে নাট্য মুহুর্ত একটি চরিত্র হয়ে ওঠেএকাধিক কন্ঠস্বর, স্বপ্নরাজ্য হতে কখনো ফেরে বাস্তবে,আবার বিচরণ করে স্বপ্নে। স্বপ্ন ও বাস্তবতা এ দুয়েরদ্বান্দিকতায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় শ্রাবণ। স্বপ্ন যখন এক সুন্দর সকালের, তখন বাস্তবতা এগিয়ে চলে সিস্টেম নামক এক সমস্যাকে নিয়ে। শিক্ষার নানামুখি সংকট আমাদের সমাজ অবক্ষয়ের অন্যতম কারণ হয়েছে। এই নাটকে পাহাড়ী-বাঙালী ভেদাভেদ ভুলে আমরা সবাই বাংলাদেশী অভিনয়ে তর্কে এবং নাচ-গানের তালে নাট্যে শিল্পীরা বিষয়টি সৃন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। যা স্থানীয় দর্শকদের মুগ্ধ করেছে৷ দীর্ঘ একযুগ পর বান্দরবান মঞ্চনাটক আয়োজনের খবরে দর্শকদের পাশাপাশি পুরনো নাট্যে শিল্পীরাও ভীড় জমায় অনুষ্ঠানস্থলে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও সাংস্কৃতিক বিভাগের কনভেনার নাছির উদ্দীন বলেন, মঞ্চ নাটক হচ্ছে শিল্পী তৈরির প্রথমস্থর। কিন্তু কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোয়ায় গ্রামগঞ্জে মঞ্চ নাটক আজ হারাতে বসেছে৷ শিল্পকলার হাত ধরে আবার মঞ্চ নাটকে ফিরবেন পাহাড়-সমতলের গ্রামের মানুষ। দীর্ঘ একযুগের বেশি সময় পরে মঞ্চনাটক দেখে ছোটবেলায় স্মৃতিতে ফিরেছিলাম কিছুক্ষণ। ছোট্ট নাটকে সমাজের অনেক অবক্ষয় আর সমস্যার বিষয়গুলো সুন্দর করে তুলে ধরেছেন শিল্পীরা। পাহাড়ি বাঙালি ভেদাভেদ তর্কাতর্কি ভুলে আমরা সবাই বাংলাদেশী কথাটিও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নাটকে। যা মুগ্ধ করেছে আমারেও।
নাট্যভাবনা, পরিকল্পনা ও নির্দেশক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুবীর মহাজন বলেন, এক ঘন্টার কম সময়ে বিশ জন শিল্পীর অংশগ্রহণে আমি চেষ্টা করেছি সমাজের ছোটখাটো কিছু সমস্যা তুলে ধরার। ভালোমন্দ বিচার করতে পারবেন দর্শকরা। আঠারের দিনের চেষ্টায় নাটকটি মঞ্চায়িত হয়েছে। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বান্দরবানের নাট্য ব্যক্তিত্ব মিলন ভট্টাচার্য, থোয়াইচা প্রু নিলু, ডমেপ্রু ডলি, জেলা শিল্পকলা একাডেমি সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বাচ্চু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আয়োজকরা জানায়, গণঅভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশে শহীদ মুনীর চৌধুরী’কে নিয়ে প্রথমবারের মত এমন একটি জাতীয় নাট্যোৎসবের আয়োজন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। নাট্যভাবনা, পরিকল্পনা ও নির্দেশনা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুবীর মহাজন, সহকারী নির্দেশনা মো. আছাদ বিন রহমান। দীর্ঘ ১৮ দিনের চেষ্টায় নাটকটি মঞ্চায়িত হয়েছে।
জাতীয় নাট্যোৎসব আয়োজনে: বান্দরবানে দীর্ঘ একযুগ পর মঞ্চ নাটক চইংজা:খ্রাং মঞ্চায়িত
Previous Articleধর্ষণের দায়ে বান্দরবানে সৎ বাবা’সহ ২ জনের যাবজ্জীবন
Related Posts
Add A Comment
