মিয়ানমারে অভ্যন্তরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘর্ষ, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে এসে পড়লো গুলি, আতঙ্কে সীমান্তবাসী

।। নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিবেদক,২৬ জুলাই ২০২৫।।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি-মিয়ানমার সীমান্তের ওপরে মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুলির শব্দে কাপছে সীমান্ত এলাকাগুলো। আজ শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের সংঘর্ষের গুলি এসে পড়ে সীমান্তের এপারে। এতে সীমান্তবর্তী ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৮ ও ৪৯ নম্বর আন্তর্জাতিক পিলার সংলগ্ন এলাকাগুলোতে থেমে থেমে চলছে গোলাগুলি। এতে চাকঢালা, ঘুমধুম, দৌছড়িসহ আশপাশের জনপদের মানুষজন ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
শনিবার সকাল ১১টার দিকেও চাকঢালা সীমান্তে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এতে শিশু ও বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হচ্ছে।
স্থানীয়দের তথ্যমতে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি (AA) এর বিরুদ্ধে অন্য বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর মধ্যে চলছে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। এই গ্রুপগুলোকে মিয়ানমার সেনা জান্তা বাহিনীর সমর্থন রয়েছে বলেও অনেকে দাবি করছেন। ফলে সংঘাতের মাত্রা আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে এবং এর প্রভাব এসে পড়ছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায়।
চাকঢালা সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম, শফিউল আলম ও আবদুর রহমান জানান, শনিবার সকাল ৬টা থেকে ৫০ নম্বর পিলার হয়ে ৪৮ নম্বর পিলার পর্যন্ত সংঘর্ষের শব্দ তারা শুনেছেন। গতবৃহস্পতিবার ও শুক্রবারও রাতে গোলাগুলির শব্দ হয়েছিল। তাদের দাবি, আরসা বাহিনী অপর একটি বিদ্রোহী গ্রুপের ‘বেন্ডুলা’ নামক ঘাঁটি দখলের চেষ্টা চালালেও টানা বৃষ্টির কারণে সফল হয়নি। তবে সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলি চলে।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, সংঘর্ষে কারও হতাহতের সুনির্দিষ্ট খবর পাওয়া যায়নি। তবে গোলাগুলির শব্দ ও পরিস্থিতির ভয়াবহতায় মানুষের মাঝে চরম উদ্বেগ বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “মিয়ানমার অভ্যন্তরে সংঘর্ষের বিষয়টি আমরা জানি। শনিবার বেলা ১১টার দিকে একটি গুলির খোসা বাংলাদেশ সীমান্তের ভেতরে এসে পড়েছে। এতে স্থানীয়দের মাঝে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রশাসন ও সীমান্তে দায়িত্বরত ৩৪ বিজিবি সদস্যরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। একই সঙ্গে স্থানীয়দের ধৈর্য ধরার ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।