মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। এমনই এক স্বপ্নদ্রষ্টার নাম নদী খন্দকার, যিনি বাংলাদেশের মেকআপ শিল্পকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন। তিনি একাধারে একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সুইডিশ শিক্ষক, মেকআপ আর্টিস্ট ও প্রশিক্ষক এবং দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার। পাশাপাশি ফেসবুক লাইভে উপস্থাপনা জন্যও ব্যাপকভাবে পরিচিত তিনি। ঢাকায় জন্মগ্রহণ করলেও মাত্র ৪ বছর বয়সে পরিবারের সাথে সুইডেনে পাড়ি জমান নদী। সেখানে শিক্ষাজীবন শেষ করে শিক্ষকতায় যোগদান করেন। কিন্তু মেকআপ শিল্পের প্রতি আবেগ তাকে গ্ল্যামার জগতের দিকে টানতে থাকে। এই আকাঙ্ক্ষার কারণে ফ্যাশন এবং সমসাময়িক ট্রেন্ডের দিকে ঝুঁকে পড়েন তিনি। নদীর বয়স যখন ২০ ছুঁইছুঁই, তখন শিক্ষকতা পেশাকে বিদায় জানিয়ে সুইডেনের বিভিন্ন সুপ্রতিষ্ঠিত বিউটিশিয়ানের কাছ থেকে মেকআপ শেখার সিদ্ধান্ত নেন।
সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন “নদী খন্দকার’স মেকওভার”। তার এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার গল্পটা অনেকটা রূপকথার মতো। সালটা ২০১৭, অল্প কিছু দিনের জন্য নদী ঢাকায় আসেন। কিন্তু এই শহরের প্রতি মুগ্ধতা থেকে তিনি আরও কিছুদিন থেকে যাবার কথা ভাবেন। এসময় সিদ্ধান্ত নেন ঢাকায় থাকাকালে তিনি মেকআপের ওপর ক্লাস নেবেন। তার বেসিক থেকে অ্যাডভান্স লেভেলের ক্লাসে অভূতপূর্ব সারা পান। সেসময় উল্লেখযোগ্য মেকআপ প্রশিক্ষকের অভাব ছিল বলেই এমন সাড়া পান নদী। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ফলোয়ারও অনেক বেড়ে যায়, যার অন্যতম কারণ লাইভ সেশনে তার সাবলীল প্রোডাক্ট রিভিউ এবং ফেসবুকে তার মেকওভার।
২০১৯ সালে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে চলে আসেন নদী। গড়ে তোলেন তার ব্রাইডাল ও পার্টি মেকওভার প্রতিষ্ঠান নদী খন্দকার’স মেকওভার। তার দক্ষতা, কঠোর পরিশ্রম এবং ব্যক্তিত্বের কারণে দ্রুত জনপ্রিয় অর্জন করেন। ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্র্যান্ডের কাছ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্র্যান্ড রিভিউ এবং প্রচারের জন্য অফারও আসতে থাকে। পাশাপাশি নদীর উপস্থাপনা বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়। এমনকি করোনাকালেও তার কর্মনিষ্ঠা এবং কাজের প্রতি ভালোবাসার কারণে অনেক ব্র্যান্ড তার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী হয়।
সুইডেনে স্কুলে শিক্ষকতা থেকে ঢাকায় একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, কাজের প্রতি আবেগ ও দৃঢ় সংকল্প যেকোনো মানুষের জীবনে স্থিতিশীলতা ও সফলতা নিয়ে আসতে পারে। তার স্বপ্ন, শিগগিরই তিনি ঢাকায় একটি পূর্ণাঙ্গ বিউটি স্কুল এবং বিউটি সেলুন প্রতিষ্ঠা করবেন। সেই সঙ্গে সমাজের তরুণীদের কাছে তিনি এই বার্তা পৌঁছে দিতে চান, আত্মবিশ্বাস, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
মেকওভার শিল্পে একজন সফল উদ্যোক্তা নদী খন্দকার
Previous Articleসফল উদ্যোক্তা হতে চান? আয়ত্ত করুন কিছু গুণাবলী
Next Article চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শুরুতে বড় দুঃসংবাদ পেল পাকিস্তান
Related Posts
Add A Comment
