।। নিজস্ব প্রতিবেদক,১২ জুন ২০২৫।।
বান্দরবানে পরিবেশ বিধ্বংসী সিন্ডিকেট চক্র পাহাড়ের পর এবার স্কেভেটর দিয়ে সাঙ্গু নদীর চরের বালু তোলে জমি ভরাটের জন্য বিক্রি করছেন। আজ বৃহস্পতিবার (১২জুন) সকালে বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নরর আটনম্বর ওয়ার্ড হেডম্যানপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখাগেছে, সাঙ্গু নদীর চরের দুটি স্থান থেকে স্কেভেটর দিয়ে বালির চর কেটে ডাম্বার ট্রাকে তোলা হচ্ছে। ছয়টি ট্রাকে করে চরের বালু গুলো নেয়া হচ্ছে বালাঘাটা উপ-বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্ধারিত জমি। বর্ষার শুরুতে পরিবেশ বিধ্বংসী এ কর্মকান্ডের কারণে নদী ভাঙনের মুখে পড়েছে একশ পরিবারের বসত ঘর।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়েকদিন ধরে সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের হেডম্যানপাড়া এলাকার স্কেভেটর লাগিয়ে সাঙ্গু নদীর চর কাটা হচ্ছে। দুটি স্কেভেটর দিয়ে কাটা চরের বালু গুলো ৬টি ডাম্পার ট্রাকে করে দিনে-রাতে বালু গুলো পাশ্ববর্তী এলাকায় জমি ভরাটের কাজের জন্য বিক্রি করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বল বড়ুয়া, রাজুময় অভিযোগ করে বলেন, তাদের পাড়াটি সাঙ্গু নদীর তীরবর্তী নিচু এলাকায়। নদীর চরটি কেটে ফেলায় বর্ষায় ভাঙনের মুখে পড়েছে গ্রামটি। এখনি এ অপকর্ম বন্ধ না করলে নদী ভাঙনে পাড়াটি বিলিন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বালু উত্তোলনে প্রভাবশালী চক্র জড়িত থাকায় সরাসরি বাঁধা দিতে সাহস পাচ্ছেন না কেউ। ইতিমধ্যে চরের প্রায় ১ লাখ ঘন ফুটেরও বেশি বালু সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনকে মেনেজ করেই পরিবেশ বিধ্বংসী সিন্ডিকেট চক্রটি নদীর চর থেকে বালু উত্তোলন করছেন বলে এলাকাবাসীর হুমকিও দেন।
বালু উত্তোলনে নিয়োজিত স্কেভেটর চালক মো. সুমন বলেন, নাজিম, সম্রাট নামের কয়েকজনের নির্দেশনায় চরের বালু কেটে ট্রাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনদিন ধরেই দিনরাতে আঠারো ঘন্টা গাড়ীগুলো চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নিজেকে নদীর চরের জায়গার মালিক দাবি করা চাইচা থোয়াই মারমা বলেন, পয়ত্রিশ হাজার টাকা চুক্তিতে বালাঘাটা এলাকার নাজিম নামে এক ব্যাক্তিকে বালু তোলার অনুমতি দিয়েছেন। তবে নদীর চর থেকে বালু উত্তোলন বা বিক্রি করা যে অপরাধ তা তার জানা ছিলনা।
অভিযুক্ত মো. নাজিম উদ্দীন বলেন, নদীর চর থেকে বালু উত্তোলন করে বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্রের জমি ভরাটের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ঠিকাদারের সাথে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ভরাটের জন্য সম্রাট নামে এক ব্যক্তির চুক্তি হয়েছে বলে শুনেছি।
এ বিষয়ে বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারুফা সুলতানা খান হীরামনি জানান, নদীর চর থেকে বালু উত্তোলনের সাথে সম্রাট নামে এক ব্যাক্তির সংশ্লিষ্টতার খবর পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন হবে।
প্রসঙ্গত: গত ২৮ মে বান্দরবান সদর উপজেলার বালাঘাটা বাকিছড়া,থোয়াইংগ্যা পাড়া এলাকায় পাহাড় কাটার অভিযোগে মো. নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ২৯ মে বান্দরবান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফা সুলতানা খান হীরামণি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পরে একই অপরাধে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আরও ২টি মামলা দায়ের করা হয়।
সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে ফের অভিযোগ: বান্দরবানে স্কেভেটর দিয়ে নদীর চর কেটে বালু বিক্রির
Previous Articleআলীকদমে নদীতে ভাসমান পর্যটকের লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ ২
Related Posts
Add A Comment