।। নিজস্ব প্রতিবেদক, ১৯ এপ্রিল ২০২৫।।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে অনেক কথায় বলেছেন
প্রধান উপদেষ্টা। কখনো এবছরের ডিসেম্বর আবার কখনো আগামী বছরের (২০২৬ সালের) জুন মাসে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রধান উপদেষ্টার বেঁধে দেয়া সময়মত আগামী বছরের জুনমাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশনিতে প্রস্তুত রয়েছে। তবে কোনো ক্রমেই জুন থেকে সরে যাওয়া যাবেনা। প্রধান উপদেষ্টা আপনি বেঁধে দেয়া সময়ে ঠিক আছেন, সেটিই জামায়াতে ইসলামী দেখতে চায়।
তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য জামায়াতে ইসলামী ৩টি শর্ত দিয়েছেন। প্রথমটা হলো নির্বাচনী ভোট পদ্ধতি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হতে হবে, দ্বিতীয় হলো নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, জুডিশিয়াল, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন’সহ রাষ্ট্রের ছয়টি অর্গান সংস্কার করে প্রশাসনকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে হবে, তৃতীয় হলো গত৫আগস্ট ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানে শহীদ’দের হত্যাকারী ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা’সহ জড়িতদের গ্রেফতার করে তাদের বিচার’কে নির্বাচনের আগেই দৃশ্যমান করতে হবে। তিনি বলেন, শহীদ’দের আত্মত্যাগে আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়েই অত্যাচারী স্বৈরশাসক ফ্যাসিবাদ সরকারের হাত থেকে সবাই রক্ষা করেছেন। এখন শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের রক্ষ দিতে হবে৷ নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নসারথি জামায়াতে ইসলামী। অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধিনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, স্বচ্ছ গনতন্ত্রের পথ ধরে জামায়াতে ইসলামী যদি তিনশ আসনের অর্ধেকে সৎযোগ্য আল্লাহ ভিরু মানুষদের নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাতে পারি, তাহলে আইন পরিবর্তন করে সাংবিধানিক কাঠামো পরিবর্তন করে নতুন বাংলাদেশ আমরা নির্মাণ করতে পারবো। জামায়াতে ইসলামী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে। আগামী নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ট আসনে নির্বাচিত হয়ে জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে সন্ত্রাস-দূর্ণীতি ফ্যাসিবাদ মুক্ত সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে।
আজ শনিবার বিকেলে চারটায় বান্দরবানের ঐতিহাসিক রাজারমাঠে প্রথমবারের মত আয়োজিত জামায়াতে ইসলামী কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেছেন।
বিশেষ অতিথি জামায়াতে চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ্ব শাজাহান চৌধুরী বলেন, ঐতিহাসিক রাজারমাঠে এ প্রথমবার সমাবেশ করছে জামায়াতে ইসলামী। পাহাড়িদের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর কোনো বিরোধ নেই। জামায়াতের কোনো নেতাকর্মী পাহাড়িদের ভূমি দখল করেনি, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি।পাহাড়িদের জায়গা জমি দখল করেছে বিগত সতের বছর ক্ষমতায় থাকা ফ্যাসিবাদ। পাহাড়ি বাঙালি বিরোধ সৃষ্টি করেছিল শেখ মুজিবুর রহমান, পাহাড়ের নৃগোষ্ঠীদের বাঙালি হবার আহবান জানিয়ে। জামায়াত ইসলামি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে, প্রতিটি জাতিগোষ্ঠী নিজস্ব ঐতিহ্য সংস্কৃতি পরিচয়ে এগিয়ে যাবে। আমাদের সবার পরিচয় হলো জাতিধর্ম বর্ন মিলেমিশে আমরা বাংলাদেশী। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ সরকারের প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম বিদেশীদের কাছে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল। ফ্যাসিস্ট নেত্রী শেখ হাসিনা শেখ মুজিবুরের কন্যা নয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কন্যা। পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের সম্পদ, এই সম্পদ রক্ষায় জাতিধর্ম বর্ন মিলেমিশে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
জেলা জামায়াতের আমীর এসএম আবদুচ ছালাম আজাদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ্ব শাজাহান চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা আমীর অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী, চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা আমীর আনোয়ারুল আলম চৌদুরী, খাগড়াছড়ি জেলা আমীর আধ্যাপক সৈয়দ আবদুল মোমেন, রাঙ্গামটি জেলা আমীর অধ্যাপক আবদুল আলীম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমীর আলাউদ্দিন সিকদার, বান্দরবান জেলা নায়েবে আমীর এডভোকেট আবুল কালাম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল আওয়াল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এদিকে কর্মী সমাবেশে যোগদিতে জেলার সাতটি উপজেলা এবং জেলার আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে খন্ডখন্ড মিছিল নিয়ে সমবেত হয়। মিছিলে মিছিলে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠে সমাবেশস্থল। অনুষ্ঠানে ইসলামি সংগীত পরিবেশন করে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা।
কর্মী সমাবেশে জামায়াতের সেক্রেটারি: আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে, কোনো ক্রমেই বাদ দেওয়া যাবেনা
Previous Articleসাবেক মেয়র সূচনার অডিও ভাইরাল
Related Posts
Add A Comment