।। নিজস্ব প্রতিবেদক,১৯ জুলাই ২০২৫।।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গনঅভ্যুত্থানেের পরে বাংলাদেশে নতুন করে ভয়ের সংস্কৃতি সৃষ্টি করা হচ্ছে। জনগন স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে গনঅভ্যুত্থানে নেমেছিল, ইনশাআল্লাহ আগামীতেও ভয়ের সংস্কৃতি কেউ তৈরি করতে চায়, জনগন আবারও রাজপথে নামবে। আজ শনিবার (১৯ জুলাই) রাতে সোয়ে নয়টায় বান্দরবান শহরের শহীদ আবু সাঈদ মুক্তমঞ্চের সামনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা জাতিস্বত্তার পরিচয়ে নিপীড়ন নির্যাতন বিভাজন মেনে নিবনা, এই অঞ্চলের ঘরে ঘরে ইনসাফের উন্নয়ন পৌছে দিতে চাই, অর্থনৈতিক ভাবে এই অঞ্চলে সম্মৃদ্ধশালী করতে চাই। জুলাই গনঅভ্যুত্থান ছিল নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েমের জন্য, জুলাই গনঅভ্যুত্থান গণবিস্ফোরণে মাধ্যমে আমরা চেয়েছি রাষ্ট্রকে নতুন করে বিনির্মান করতে, যে ব্যবস্থাগুলো জনগণের পক্ষে তৈরি হয়নি, যে আইন যে সংবিধান আমাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে রেখেছেন, আমাদের মানবাধিকার আমাদের মর্যাদা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছিল, সেই রাষ্ট্রের বদল ঘটিয়ে নতুন একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা নতুন একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবো। প্রিয় বান্দরবানবাসী আমরা সেই লড়াইয়ে এখনো আছি, সরকার পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তন হয়নি, মানুষের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু সিস্টেম অক্ষত রয়ে গেছে। আমরা জানি বাংলাদেশে বহুজাতি গোষ্ঠী বসবাস করে যুগযুগ ধরে, মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে যে সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল সেখানে সব জাতীগোষ্ঠী ধর্ম অন্তর্ভুক্ত করতে পারি নাই, সকলকে নাগরিক মর্যাদা দিতে পারি নাই। ফলে এ যে মুজিববাদী সংবিধান গোড়া থেকেই ফ্যাসিস্ট সংবিধান ছিল।
যেটি সমাজ রাষ্ট্রে সবসময় বিভাজন তৈরি করে রাখতো, আমরা বলেছি মুজিববাদ যেটি ফ্যাসিবাদের আদর্শ ছিল, মুবিজবাদ যে আমাদের যুগযুগ ধরে বিভাজন করে রেখেছে, কখনো মুক্তিযোদ্ধা বনাম রাজাকার, কখনো বাঙালি বনাম পাহাড়ি, কখনো ইসলাম বনাম ধর্ম নিরপেক্ষতা নানা নামে নানা সময়ে বিভাজন তৈরি করে রেখেছিল, গনঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে সকল বিভাজন দূর হয়েছে, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ জায়গায় আসতে পেরেছি, আমাদের ঐক্যের জায়গাটি ছিল বাংলাদেশ।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি, স্থানীয় জেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মো.শহীদুর রহমান সোহেল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও পথসভায় এনসিপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিকেল পাচটায় পথসভা শুরু হবার কথা থাকলেও শোয়ে আটটায়ও অনুষ্ঠানস্থলে পৌছাতে পারেনি এনসিপি কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে অনুষ্ঠানস্থলে বিকেল থেকে ভীড় জমাতে থাকে জনসাধারণ। দলীয় নেতাকর্মীদের চেয়ে জুলাই আগস্টের বিপ্লবীদের একনজর দেখতে তাদের বক্তব্য শুনতে উৎসুক জনতার ভীড় ছিল চোখে পড়ার মতন। দীর্ঘ তিনঘণ্টা সময় পেরুনোর পরও কেন্দ্রীয় নেতারা না পৌছায় পথসভাস্থল কিছুটা ফাঁকা হলেও কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে পথসভাস্থল।
অপরদিকে পথসভাকে কেন্দ্র করে আইনশৃংখলা বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে আশপাশের এলাকাগুলোতে। অনুষ্ঠানস্থল’সহ সড়কের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল জোরদার করে।
বান্দরবানে পথসভায় এনসিপি আহবায়ক নাহিদ: ভয়ের সংস্কৃতি কেউ তৈরি করতে চাইলে জনগন আবারও রাজপথে নামবে
Previous Articleজুলাই আগস্ট শহীদদের স্মরণে বান্দরবানে বিএনপির মৌন মিছিল
Related Posts
Add A Comment