।। নিজস্ব প্রতিবেদক,৭ জুলাই ২০২৫।।
বান্দরবানের জামছড়ি ইউনিয়নের বাঘমারা বাজারফান্ডের ইজারাদার কর্তৃক জোরপূর্বকভাবে টোল টেক্স আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বান্দরবান জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফ চৌধুরীর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় জেলা পরিষদ নিয়মের বাইরে গিয়ে সড়কপথে মালামাল পরিবহনকারী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী যানবাহন থেকে প্রতিদিন জোর পূর্বক চাঁদা হাসিল তোলার প্রতিবাদে সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে বান্দরবান প্রেসক্লাবের সামনে বাঘমারা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি দেন ভুক্তভোগী স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা স্থানীয়দের বিগত ২৫-৩০ পর্যন্ত মালামাল বান্দরবানে আনতে কোন ধরনের টেক্স দিতে হয় নাই। সম্প্রীতি টোল টেক্স এর নামে বান্দরবান জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও তার সঙ্গীরা জোর পূর্বক টেক্স আদায়ের নামে প্রতিটি গাড়ী থেকে চাঁদা আদায় করে আসছে।
জেলা পরিষদ সূত্র বলছে, চলতি বছরে ৩০ জুন ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের বাঘমারা বাজার ফান্ডের ইজারাদার নিয়োগ দেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থানজামা লুসাই। পহেলা জুলাই থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এক বছরে জন্য মেসার্স মিল্টন ট্রেডার্স স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফ চৌধুরীর ইজারাদার হিসেবে নিয়োগ পান। ইজারা নিয়োগের শর্তনুযায়ী সপ্তাহের দুইবার টোল ট্যাক্স আদায় করতে বলা হয়েছে। কিন্তু দুইবার টোল ট্যাক্স উল্লেখ করা থাকলেও দলীয় কর্মীদের দিয়ে প্রতিদিন বেপরোয়াভাবে চাঁদা উত্তোলনের অভিযোগ উঠে। বাঘামারা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দীর্ঘ বছর ধরে পার্বত্য জেলা পরিষদ অধীনে বাজার ফান্ডে টোল টেক্স ইজারা নিয়োগ দেয়া হয়। স্থানীয়রা বিগত ২৫-৩০ বছর পর্যন্ত বান্দরবানে মালামাল নিতে-আনতে কোন ধরনের টেক্স দিতে হয় নাই। শুধু সাপ্তাহিক বাজার দিনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ইজারা দিতে হয়। গত শুক্রবার থেকে টোল-টেক্স এর নামে বান্দরবান জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও তার সঙ্গীরা জোর পূর্বক টেক্স আদায়ের নামে প্রতিটি গাড়ী থেকে চাঁদা আদায় করে আসছে। যা আইনের বাইরে গিয়ে অনিয়মের আশ্রয় নিচ্ছেন।
বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মো. আবুল কাশেম বলেন, আগের নিয়ম ছিল শুধু বাজার দিনে বিক্রেতাদের কাছ থেকে হাসিল তোলা। আর এখন বিএনপি নেতারা জোড়পূর্বক ভাবে সড়কপথ,নদীর পথ সবদিক দিয়ে প্রতিদিন চাঁদা তুলছে। আমরা এলাকার জনসাধারণ বিরক্তি হয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই কাছে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়ে এসেছি। যদি আগের নিয়মেই টোল-ট্যাক্স আদায় করা না হয় তাহলে সমস্যা সৃষ্টি হবে। জামছড়ি চেয়ারম্যান ক্যসিংশৈ মারমা বলেন, নিয়মের বাইরে চাঁদা তোলার বিষয়টি শুনেছি। আর সেটি জেলা পরিষদ অধীনে পড়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও ইজারাদার আরিফ চৌধুরী বলেন, জেলা পরিষদ থেকে আমরা বাঘমারা বাজার ইজারা নিয়েছি। আমাদের সেখানকার ছেলেরা যারা ইজারা তুলছে সেটা জেলা পরিষদ অধীনে তোলা হচ্ছে, বাহির থেকে কোনো ইজারা টোল আদায় করা হচ্ছেনা।
সপ্তাহে দুবার ইজারা তোলার প্রসঙ্গে বলেন, যেহেতু ইজারা ডাক পেয়েছি সেহেতু প্রতিদিন ছেলেরা ইজারা তুলবে’ সেখানে কোন সপ্তাহের দুবার লাগেনা আর হোক যেকোন পথ। আর কিছুক্ষণ আগে চেয়ারম্যান ফোন দিয়ে বলেছে বাঘমারা ইজারা বাতিল করা হয়েছে। আমরা আগামীকাল চেয়ারম্যান সাথে বৈঠক করে ইজারা টাকা ফেরত চাইব।
এ বিষয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থানজামা লুসাই বলেন, নিয়মের বাইরে চাঁদা তোলার বিষয়টি শুনেছি। জেলা পরিষদ থেকে যে ইজারা ডাক দেয়া হয়েছে সেটি শুধু বাজারফান্ড ভিতর সীমাবদ্ধ থাকবে। বাজার ফান্ডের বাইরে যেসব সড়ক পথ রয়েছে, সেখানে তোলার কোন নিয়ম নেই। ঘটনা শোনার পর আমরা ইজারা বাতিল করে সেই আগের নিয়মে করে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
জেলা যুবদলের সেক্রেটারির বিরুদ্ধে বান্দরবানে জোরপূর্বক টোল আদায়ের অভিযোগ
Previous Articleচোরাই মালামাল উদ্ধার, বান্দরবানে আলোচিত চোর মানিক’সহ গ্রেফতার ৩
Related Posts
Add A Comment
